শোয়েব আখতারের টুইট, ‘কুইন্টন ডি ককের করা রানআউট কি (ক্রিকেটের) চেতনাবিরোধী নয়? সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার আপনাদের।’ শুধু পাকিস্তানের এই সাবেক পেসারই নন, আরও অনেকেই টুইট করেন ফখরের রানআউট নিয়ে। তাঁদের অভিযোগ, পাকিস্তানি ওপেনারকে রানআউট করতে দক্ষিণ আফ্রিকান উইকেটকিপার চাতুরীর (ফেক ফিল্ডিং) আশ্রয় নিয়েছেন, যেটা ক্রিকেটের আইনপরিপন্থী।
জোহানেসবার্গে কাল আরেকটু হলেই ওয়ানডেতে নিজের দ্বিতীয় ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ পেতে পারতেন ফখর। প্রোটিয়াদের ৩৪১ রান তাড়া করতে নেমে ১৯৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান। শেষ ওভারের প্রথম বলে রানআউট হন তিনি। লং অফ থেকে এইডেন মার্করামের সরাসরি থ্রো ভেঙে দেয় স্টাম্প। তবে এই ম্যাচ যাঁরা দেখেছেন কিংবা পরে ভিডিও রিপ্লে দেখলে বোঝা যায়, ডি কক খানিকটা চাতুরীর আশ্রয় নিয়েছিলেন।
লং অফে বল পাঠিয়ে ২ রান নেওয়ার জন্য ছুটছিলেন ফখর। মার্করাম থ্রো করেছিলেন উইকেটকিপারের দিকে। ফখর উল্টো দিকে দৌড়ানোয় তা খেয়াল করেননি। তাঁর সামনে ছিলেন ডি কক। প্রোটিয়া উইকেটকিপার হাত তুলে বলটা বোলারের প্রান্তে থ্রো করার ইঙ্গিত করছিলেন মার্করামের প্রতি। তা দেখে ফখর দৌড়ের গতি কমিয়ে দেন, একবার পেছনেও তাকান। ডি ককের ইঙ্গিত দেখে তিনি ভেবে নেন থ্রোটা যাবে বোলারের প্রান্তে। কিন্তু এতেই বোকা বনে গিয়ে ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার সুযোগটা হারাতে হয় ফখরকে। উইকেটকিপারের প্রতি মার্করামের থ্রো সরাসরি স্টাম্প ভেঙে দেয়। দৌড়ের গতি কমানোয় ফখর তখনো ক্রিজের বাইরে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে কথা হচ্ছে প্রচুর। ডি কক কাজটি ইচ্ছা করে করলে তা ক্রিকেটের আইনপরিপন্থী। ক্রিকেটের ৪১.৫.১ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ফিল্ডার ইচ্ছা করে নিজের কথা, কাজ ও আচরণের দ্বারা ব্যাটসম্যানের সঙ্গে চাতুরী করলে তাতে আইনের লঙ্ঘন ঘটবে।’ এভাবে আইন ভাঙলে ৫ রান জরিমানা এবং ডেলিভারিটি পুনরায় করার নিয়ম রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত জিতেছে ১৭ রানে।
ফখর অবশ্য ডি কককে কোনো দোষ দিচ্ছেন না। নিজের কাঠগড়ায় তিনি দাঁড় করিয়েছেন নিজেকেই। বলটা তাঁর খেয়াল করা উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি, ‘ভুলটা আমারই। হারিস রউফ ক্রিজে পৌঁছেছে কি না, সেটা দেখার চেষ্টা করছিলাম, কারণ সে একটু দেরিতে দৌড় শুরু করেছিল। বাকিটা ম্যাচ রেফারির সিদ্ধান্তের ওপর। তবে আমি মনে করি না এটা কুইন্টনের ভুল।’ মাঠের আম্পায়াররাও তখন বিষয়টি খেয়াল করেননি। তবে ফখরের মন্তব্যের পর আম্পায়াররা বিষয়টি নিয়ে বসতে পারেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। যদিও কুইন্টন ডি ককের বিরুদ্ধে অভিযোগটি প্রমাণ করা খুব কঠিন হবে। কেননা, ফিল্ডারকে ননস্ট্রাইকে বল থ্রো করার ইঙ্গিত করতেই পারেন উইকেটকিপার। যদিও ফখরকে আউট করার উদ্যাপনে ডি ককের ইঙ্গিত বুঝিয়ে দিচ্ছিল ব্যাটসম্যানকে দ্বিধায় ফেলতেই তিনি কাজটি করেছেন।
পাকিস্তানের সংবাদকর্মী ও ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদ মাজহার আরশাদের টুইট, ‘কৌশল করে ফখর জামানকে রানআউট করেছেন কুইন্টন ডি কক। তবে আম্পায়াররা তা ফেক ফিল্ডিং মনে করেননি। এটা নিয়ে ভালো বিতর্ক হতে পারে।’ তবে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা মনে করেন, তাঁর উইকেটরক্ষক বুদ্ধি খাটিয়ে ফখরকে রানআউট করেছেন, ‘কুইনি (কুইন্টন ডি কক) বেশ চালাকি করেছে। এটাকে খেলার চেতনাবিরোধী বলতে পারেন অনেকে। কিন্তু ফখরের উইকেটটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সে লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।’ জয়ের জন্য শেষ ওভারে ৩১ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের।
0 Comments